ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নতুন চমক।

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 96

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: চলতি মাসে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের ২০-২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নতুন চমক। কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের জন্য অপেক্ষা করছে নতুন চমক। কী সেই চমক? সভাপতি পদে শেখ হাসিনা থাকছেন। অন্যান্য পদে পরিবর্তন আসছে এমন ইংগিত দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু কারা নেতৃত্বে আসছেন? কারা ছিটকে পড়ছেন?

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিতে রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত দপ্তর উপ-কমিটির বৈঠকে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে একটা পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া আমরা কেউই অপরিহার্য না। তিনি এখনো আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, সভাপতির পদ ছাড়া অন্য যেকোনো পদে পরিবর্তন হতে পারে। সেটা নির্ভর করবে দলীয় সভাপতির ওপর।

এদিকে, দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃর্ণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে আলোচনা। কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত নেতারা সম্মেলনকে ঘিরে ‘ভীতি ও আতঙ্কে’ থাকলেও পরিচ্ছন্ন নেতারা আশায় বুক বেধেছেন। তাদের প্রত্যাশা অঙ্গ সংগঠনগুলোর মতোই তাদের মূল্যায়ন হবে। তবে কারা সামনের সারিতে আসছেন তা আন্দাজ করা কঠিন।

জাতীয় সম্মেলন ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে মহাসমারোহে চলছে সাংগঠনিক তৎপরতা। তৃর্ণমূল কমিটিগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হচ্ছে। জেলা কমিটি থেকে মহানগর কমিটি সর্বত্রই দেখা গেছে পরিবর্তন, এসেছে নতুন নেতৃত্ব। ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতৃত্বে এসেছে নতুন মুখ। তাইতো আওয়ামী লীগের আগামী ২১তম জাতীয় সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী।

ক্যাসিনো, দুর্নীতি বিরোধী অভিযান, দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার শাস্তি এবং নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সম্মেলনে সংগঠনের শীর্ষ দুই পদে পরিবর্তন আসায় জাতীয় সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কী পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে সে আলোচনা এখন সর্বত্র।

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে চলছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। আবার অনেকের মধ্যে পদ হারানোর ভয়ও কাজ করছে। সম্মেলন একদিকে যেমন অনেক নেতা কেন্দ্রীয় পদ পাবায় আশায় উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছেন। ঠিক অপর দিকে অনেক নেতাই দুশ্চিন্তায় পদ হারানোর দুশ্চিন্তায়। নবীনের আগমন আর প্রবীণের বিদায় এসব মিলিয়ে চমক অপেক্ষা করছে আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে।

এছাড়া প্রতিবার সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তা নিয়ে থাকে সকলের আকর্ষণ। তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাঝে বড় ধরনের অসুস্থতার ধকল কাটিয়ে এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। আবারো তার এ পদে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের দলের জন্য ব্যাপক পরিশ্রম করেন বলে সর্বজন বিধিত। এরপরও এ পদে যদি পরিবর্তন আসে তাহলে দালের আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামও আলোচনায় রয়েছেন।

দলের একাধিক সূত্রমতে, এবার চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্ব খুজছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাদের স্থান দেবেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যারা রাজনীতি করেছেন এমন পরিবার থেকে নেতৃত্ব আসবে দলে। আবার সমাজের আলোকিত মুখও দেখা যাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে। সাবেক ছাত্রনেতা, জেলা ও মহানগর পর্যায় থেকেও অনেককে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেয়া হবে। নারী নেতৃত্বের সংখ্যায় এবার বাড়বে দ্বিগুন।

তথ্যমতে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯০-এর খ-এর খ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আগামী ২০২০ সালের মধ্যে যেকোনো রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে দেশের সব দলের প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। বর্তমান কমিটির অর্ধেকের বেশি নেতার পদ-পদবিতে পরিবর্তন আসতে পারে। অর্ধেকের মতো নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন। বিশেষ করে নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে তরুণ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতারা স্থান পাবেন নতুন কমিটিতে।

Tag :

শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নতুন চমক।

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: চলতি মাসে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের ২০-২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নতুন চমক। কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের জন্য অপেক্ষা করছে নতুন চমক। কী সেই চমক? সভাপতি পদে শেখ হাসিনা থাকছেন। অন্যান্য পদে পরিবর্তন আসছে এমন ইংগিত দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু কারা নেতৃত্বে আসছেন? কারা ছিটকে পড়ছেন?

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিতে রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত দপ্তর উপ-কমিটির বৈঠকে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে একটা পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া আমরা কেউই অপরিহার্য না। তিনি এখনো আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, সভাপতির পদ ছাড়া অন্য যেকোনো পদে পরিবর্তন হতে পারে। সেটা নির্ভর করবে দলীয় সভাপতির ওপর।

এদিকে, দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃর্ণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে আলোচনা। কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত নেতারা সম্মেলনকে ঘিরে ‘ভীতি ও আতঙ্কে’ থাকলেও পরিচ্ছন্ন নেতারা আশায় বুক বেধেছেন। তাদের প্রত্যাশা অঙ্গ সংগঠনগুলোর মতোই তাদের মূল্যায়ন হবে। তবে কারা সামনের সারিতে আসছেন তা আন্দাজ করা কঠিন।

জাতীয় সম্মেলন ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে মহাসমারোহে চলছে সাংগঠনিক তৎপরতা। তৃর্ণমূল কমিটিগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হচ্ছে। জেলা কমিটি থেকে মহানগর কমিটি সর্বত্রই দেখা গেছে পরিবর্তন, এসেছে নতুন নেতৃত্ব। ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতৃত্বে এসেছে নতুন মুখ। তাইতো আওয়ামী লীগের আগামী ২১তম জাতীয় সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী।

ক্যাসিনো, দুর্নীতি বিরোধী অভিযান, দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার শাস্তি এবং নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সম্মেলনে সংগঠনের শীর্ষ দুই পদে পরিবর্তন আসায় জাতীয় সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কী পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে সে আলোচনা এখন সর্বত্র।

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে চলছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। আবার অনেকের মধ্যে পদ হারানোর ভয়ও কাজ করছে। সম্মেলন একদিকে যেমন অনেক নেতা কেন্দ্রীয় পদ পাবায় আশায় উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছেন। ঠিক অপর দিকে অনেক নেতাই দুশ্চিন্তায় পদ হারানোর দুশ্চিন্তায়। নবীনের আগমন আর প্রবীণের বিদায় এসব মিলিয়ে চমক অপেক্ষা করছে আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে।

এছাড়া প্রতিবার সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তা নিয়ে থাকে সকলের আকর্ষণ। তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাঝে বড় ধরনের অসুস্থতার ধকল কাটিয়ে এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। আবারো তার এ পদে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের দলের জন্য ব্যাপক পরিশ্রম করেন বলে সর্বজন বিধিত। এরপরও এ পদে যদি পরিবর্তন আসে তাহলে দালের আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামও আলোচনায় রয়েছেন।

দলের একাধিক সূত্রমতে, এবার চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্ব খুজছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাদের স্থান দেবেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যারা রাজনীতি করেছেন এমন পরিবার থেকে নেতৃত্ব আসবে দলে। আবার সমাজের আলোকিত মুখও দেখা যাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে। সাবেক ছাত্রনেতা, জেলা ও মহানগর পর্যায় থেকেও অনেককে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেয়া হবে। নারী নেতৃত্বের সংখ্যায় এবার বাড়বে দ্বিগুন।

তথ্যমতে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯০-এর খ-এর খ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আগামী ২০২০ সালের মধ্যে যেকোনো রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে দেশের সব দলের প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। বর্তমান কমিটির অর্ধেকের বেশি নেতার পদ-পদবিতে পরিবর্তন আসতে পারে। অর্ধেকের মতো নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন। বিশেষ করে নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে তরুণ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতারা স্থান পাবেন নতুন কমিটিতে।