ঢাকা ০৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদক বেচে কোটিপতি ‘ইটভাটায় কামলার কাজ করা সেই কালু

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ নভেম্বর ২০২১
  • / 50

মাদক বেচে কোটিপতি ‘জমিদারের ছেলে’ কালু
মো. আব্দুল আলিম কালু (৪৫)। চার বছর আগেও রাজশাহীর চারঘাটের হলিদাগাছির মুন্তাজ আলীর ইটভাটায় কামলার কাজ করতেন। স্ত্রী শাহারা খাতুনকে (৩৫) দিয়ে গোপনে করাতেন মাদক ব্যবসা। ছোটখাট মাদক দিয়ে শুরু হলেও মাত্র ৪ বছরে আজ তিনি মাদক সম্রাট। তবে অজ্ঞাত কারণেই তিনি রয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আলিম কালু প্রশাসনের খাতায় মাদক কারবারি হিসেবে চিহ্নিত একটি নাম। এপর্যন্ত ৫টি মাদক মামলার আসামি তিনি। এর মধ্যে চারঘাট থানায় ২০১২, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনটি মাদক মামলা, পুঠিয়া থানায় ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারিতে একটি ও সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর আরও একটি মাদক মামলার আসামি তিনি।

জানা গেছে, মাদকের উপার্জিত অর্থের জোরে আটক হয়েও রফাদফায় ছাড়া পেয়েছেন একাধিকবার। তবে ইদানিং ভোল পাল্টেছেন আলিম কালু। ভারত কিংবা প্রশাসনের কাছ থেকেই জব্দকৃত মাল কেনেন কালু। অভাবগ্রস্ত ও মাদকসেবীদের দিয়ে করাচ্ছেন ব্যবসা। আড়ালে থাকছেন নিজে। এতে মাদকসহ অন্যরা ধরা পড়লেও অধরাই থেকে যাচ্ছেন আলিম কালু।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, আলিম কালুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আমাদের ডাটাবেইজে রয়েছে। তার মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও তার সঙ্গে যদি আমাদের কোনো সদস্য যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মো. আরেফিন জুয়েল এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আলিম কালুর চাচাতো ভাই মো. রাসেল ২০০ গ্রাম ও ৫০ পিস ইয়াবাসহ ধরা পড়েন। জবানবন্দিতে রাসেল স্বীকার করেছেন তার চাচাতো ভাই কালুর মাদকদ্রব্য তিনি পাচার করতেন। এনিয়ে কালুর নামের পলাতক মামলা করা হয়েছে বেলপুকুর থানায়।

আলিম কালুর সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার সলুয়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. আব্দুল আলিম কালু। এক সময় হলিদাগাছিতে মুন্তাজ আলীর ইটভাটায় কামলা হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী শাহারা খাতুনকে দিয়ে করাতেন মাদকের ব্যবসা। ছোট ছোট চালানের মাদক কারবারেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। এখন চারঘাটে মাদকের গডফাদার হিসেবে একনামে পরিচিত আলিম কালু। তার হাতেই চারঘাটে মাদকের একক নিয়ন্ত্রণ।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, চামটা গ্রামে রাস্তার পাশে বানিয়েছেন একটি আলিশান বাড়ি। বাড়ি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বাড়ির নামকরণ করেছেন ‘শাহারা মঞ্জিল’। বাড়ির পাশেই প্রায় দেড় বিঘার একটি বিশাল পুকুর নিয়েছেন লিজে। পাকা রাস্তার ধারেই ক্রয় করেছেন সোয়া দুই বিঘা জমি। যার মূল্য ৪৫ লাখ টাকা। রয়েছে একটি গরুর খামার যেখানে প্রায় ৮-১০টি গরু রয়েছে। সম্প্রতি ফেজার ব্র্যান্ড্রের আড়াই লাখ টাকা দামের একটি বাইকও কিনেছেন, কিনেছেন ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে ৩ বিঘা জমি। একটি ডিসকভার ও একটি হিরো হাঙ্ক বাইকের মালিকও তিনি। এছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে বিভিন্ন সম্পত্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, নগদ অর্থ কালু নিজের কাছে রাখেন না, রাখেন তার বড় ভাই আফাজের হেফাজতে। ব্যবসার টাকার হিসাব থাকে তার অধীনে। কালুর মাদক ব্যবসার লক্ষাধিক টাকার আদান-প্রদান হয় বিকাশের দুটি এজেন্ট ও কয়েকটি ব্যক্তিগত নম্বরের মাধ্যমে। তার বাড়িতে কয়েক লক্ষাধিক টাকা নগদ গচ্ছিত রাখেন তিনি। প্রশাসনিক হয়রানি কিংবা গ্রেফতার এড়াতে ওই মোটা অংকের অর্থ নিজ হেফাজতে রাখেন তিনি। মাস দুয়েক আগে বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। পরে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তি মেলে তার।

তিনি আরও জানান, মাস খানেক আগে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়েন কালুর শালা শাহারুল। শালাকে ছাড়াতে দেড় লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে মুক্তি মেলে না শাহারুলের। তবে প্রদেয় একলাখ টাকা ফিরে পান তিনি।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, আলিম কালু গরুর খামারের আড়ালে চালান মাদক ব্যবসা। সেখানে রেখেছেন হেরেনইন প্যাকেট করার মেশিন। প্যাকেটের গায়ে শীল ব্যবহার করেন টিউবয়েল মার্কা। হেরোইন পরিমাপক পাল্লাও রয়েছে তার কারখানায়। এ মেশিন দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ওজন করে সরবরাহ করেন। এসব গোপন কাজে কালুর একমাত্র সহযোগী তার স্ত্রী শাহারা।

এখানেই শেষ নয়, হেরোইন ও ইয়াবার পাশাপাশি কালুর রয়েছে অস্ত্রের ব্যবসা। বাঘা, পুঠিয়া, চারঘাট এলাকায় যে সকল অস্ত্র ও হেরোইনের বড় বড় চালান ধরা পড়ে এসকল মাদকের সঙ্গে রয়েছে আলিম কালুর যোগসূত্র। মূলত তার মাদক ও অস্ত্রের সাম্রাজ্য গড়েছেন প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে। এমনকি নিজের মাদক ব্যবসার সুদৃঢ়তার লক্ষ্যে চারঘাট সলুয়া ইউনিয়নে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করছেন তিনি।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক সদস্য আলিম কালুর নিকট তার জব্দকৃত মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে। সম্প্রতি সপ্তাহ দেড়েক আগেও কালুর কাছে ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রি করেছেন।

মাদক ও অস্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে আলিম কালু বলেন, ‘এসব ফালতু কথা। আমি জমিদার ঘরের ছেলে। আমার বাপ-দাদার জমিজমার অভাব নাই।’

এ কথা বলে ফোনটি আকাশ নামের এক ব্যক্তির কাছে ধরিয়ে দেন কালু। পরে আকাশ জানান, এত বেশি কথা বলা যাবে না। বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে পুলিশের চারঘাট সার্কেলের এসপি প্রণব কুমার বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। তাকে আমি চিনি না। তার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে যদি কোনো ওয়ারেন্ট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। এছাড়াও কেউ যদি আলিম কালুর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।

নিউজ লাইট ৭১/মোঃ রকিবুজ্জামান রকি

Tag :

শেয়ার করুন

মাদক বেচে কোটিপতি ‘ইটভাটায় কামলার কাজ করা সেই কালু

আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ নভেম্বর ২০২১

মাদক বেচে কোটিপতি ‘জমিদারের ছেলে’ কালু
মো. আব্দুল আলিম কালু (৪৫)। চার বছর আগেও রাজশাহীর চারঘাটের হলিদাগাছির মুন্তাজ আলীর ইটভাটায় কামলার কাজ করতেন। স্ত্রী শাহারা খাতুনকে (৩৫) দিয়ে গোপনে করাতেন মাদক ব্যবসা। ছোটখাট মাদক দিয়ে শুরু হলেও মাত্র ৪ বছরে আজ তিনি মাদক সম্রাট। তবে অজ্ঞাত কারণেই তিনি রয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আলিম কালু প্রশাসনের খাতায় মাদক কারবারি হিসেবে চিহ্নিত একটি নাম। এপর্যন্ত ৫টি মাদক মামলার আসামি তিনি। এর মধ্যে চারঘাট থানায় ২০১২, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনটি মাদক মামলা, পুঠিয়া থানায় ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারিতে একটি ও সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর আরও একটি মাদক মামলার আসামি তিনি।

জানা গেছে, মাদকের উপার্জিত অর্থের জোরে আটক হয়েও রফাদফায় ছাড়া পেয়েছেন একাধিকবার। তবে ইদানিং ভোল পাল্টেছেন আলিম কালু। ভারত কিংবা প্রশাসনের কাছ থেকেই জব্দকৃত মাল কেনেন কালু। অভাবগ্রস্ত ও মাদকসেবীদের দিয়ে করাচ্ছেন ব্যবসা। আড়ালে থাকছেন নিজে। এতে মাদকসহ অন্যরা ধরা পড়লেও অধরাই থেকে যাচ্ছেন আলিম কালু।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, আলিম কালুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আমাদের ডাটাবেইজে রয়েছে। তার মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও তার সঙ্গে যদি আমাদের কোনো সদস্য যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মো. আরেফিন জুয়েল এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আলিম কালুর চাচাতো ভাই মো. রাসেল ২০০ গ্রাম ও ৫০ পিস ইয়াবাসহ ধরা পড়েন। জবানবন্দিতে রাসেল স্বীকার করেছেন তার চাচাতো ভাই কালুর মাদকদ্রব্য তিনি পাচার করতেন। এনিয়ে কালুর নামের পলাতক মামলা করা হয়েছে বেলপুকুর থানায়।

আলিম কালুর সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার সলুয়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. আব্দুল আলিম কালু। এক সময় হলিদাগাছিতে মুন্তাজ আলীর ইটভাটায় কামলা হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী শাহারা খাতুনকে দিয়ে করাতেন মাদকের ব্যবসা। ছোট ছোট চালানের মাদক কারবারেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। এখন চারঘাটে মাদকের গডফাদার হিসেবে একনামে পরিচিত আলিম কালু। তার হাতেই চারঘাটে মাদকের একক নিয়ন্ত্রণ।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, চামটা গ্রামে রাস্তার পাশে বানিয়েছেন একটি আলিশান বাড়ি। বাড়ি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বাড়ির নামকরণ করেছেন ‘শাহারা মঞ্জিল’। বাড়ির পাশেই প্রায় দেড় বিঘার একটি বিশাল পুকুর নিয়েছেন লিজে। পাকা রাস্তার ধারেই ক্রয় করেছেন সোয়া দুই বিঘা জমি। যার মূল্য ৪৫ লাখ টাকা। রয়েছে একটি গরুর খামার যেখানে প্রায় ৮-১০টি গরু রয়েছে। সম্প্রতি ফেজার ব্র্যান্ড্রের আড়াই লাখ টাকা দামের একটি বাইকও কিনেছেন, কিনেছেন ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে ৩ বিঘা জমি। একটি ডিসকভার ও একটি হিরো হাঙ্ক বাইকের মালিকও তিনি। এছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে বিভিন্ন সম্পত্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, নগদ অর্থ কালু নিজের কাছে রাখেন না, রাখেন তার বড় ভাই আফাজের হেফাজতে। ব্যবসার টাকার হিসাব থাকে তার অধীনে। কালুর মাদক ব্যবসার লক্ষাধিক টাকার আদান-প্রদান হয় বিকাশের দুটি এজেন্ট ও কয়েকটি ব্যক্তিগত নম্বরের মাধ্যমে। তার বাড়িতে কয়েক লক্ষাধিক টাকা নগদ গচ্ছিত রাখেন তিনি। প্রশাসনিক হয়রানি কিংবা গ্রেফতার এড়াতে ওই মোটা অংকের অর্থ নিজ হেফাজতে রাখেন তিনি। মাস দুয়েক আগে বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। পরে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তি মেলে তার।

তিনি আরও জানান, মাস খানেক আগে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়েন কালুর শালা শাহারুল। শালাকে ছাড়াতে দেড় লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে মুক্তি মেলে না শাহারুলের। তবে প্রদেয় একলাখ টাকা ফিরে পান তিনি।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, আলিম কালু গরুর খামারের আড়ালে চালান মাদক ব্যবসা। সেখানে রেখেছেন হেরেনইন প্যাকেট করার মেশিন। প্যাকেটের গায়ে শীল ব্যবহার করেন টিউবয়েল মার্কা। হেরোইন পরিমাপক পাল্লাও রয়েছে তার কারখানায়। এ মেশিন দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ওজন করে সরবরাহ করেন। এসব গোপন কাজে কালুর একমাত্র সহযোগী তার স্ত্রী শাহারা।

এখানেই শেষ নয়, হেরোইন ও ইয়াবার পাশাপাশি কালুর রয়েছে অস্ত্রের ব্যবসা। বাঘা, পুঠিয়া, চারঘাট এলাকায় যে সকল অস্ত্র ও হেরোইনের বড় বড় চালান ধরা পড়ে এসকল মাদকের সঙ্গে রয়েছে আলিম কালুর যোগসূত্র। মূলত তার মাদক ও অস্ত্রের সাম্রাজ্য গড়েছেন প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে। এমনকি নিজের মাদক ব্যবসার সুদৃঢ়তার লক্ষ্যে চারঘাট সলুয়া ইউনিয়নে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করছেন তিনি।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক সদস্য আলিম কালুর নিকট তার জব্দকৃত মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে। সম্প্রতি সপ্তাহ দেড়েক আগেও কালুর কাছে ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রি করেছেন।

মাদক ও অস্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে আলিম কালু বলেন, ‘এসব ফালতু কথা। আমি জমিদার ঘরের ছেলে। আমার বাপ-দাদার জমিজমার অভাব নাই।’

এ কথা বলে ফোনটি আকাশ নামের এক ব্যক্তির কাছে ধরিয়ে দেন কালু। পরে আকাশ জানান, এত বেশি কথা বলা যাবে না। বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে পুলিশের চারঘাট সার্কেলের এসপি প্রণব কুমার বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। তাকে আমি চিনি না। তার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে যদি কোনো ওয়ারেন্ট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। এছাড়াও কেউ যদি আলিম কালুর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।

নিউজ লাইট ৭১/মোঃ রকিবুজ্জামান রকি