অসহায় শিল্পীদের পাশে কুদ্দুস বয়াতী
- আপডেট টাইম : ১২:৫৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মে ২০২১
- / 86
৭১: দেশবরেণ্য লোকশিল্পী কুদ্দুস বয়াতী। শুধু ভালো শিল্পী নয়, তিনি যে একজন ভালোমনের মানুষও তার প্রমাণ মেলে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত লোকশিল্পীদের সাথে কথা বললে।
হতাশ হয়ে কেউ কেউ গান ছেড়ে দিয়েছিলেন, কেউ আবার একটা প্লার্টফর্মের অভাবে পড়েছিলেন আধারে। যেই সময় অর্থাভাব, অসহায়ত্ব, অসচ্ছলতা আর দারিদ্র্যের কশাঘাতে জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ, সেই সময় আশার আলো হয়ে হাজির হয়েছিলেন কুদ্দুস বয়াতী।
দীর্ঘদিন ধরেই দেশের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত লোকশিল্পীদের নিয়ে কাজ করে আসছেন কুদ্দুস বয়াতী। শুধু তাই নয়, আধারে থাকা লোকশিল্পীদের খুঁজে বের করে ‘কুদ্দুস বয়াতী’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরছেন অসহায় এসব লোকশিল্পীর গানসহ তাদের দুঃখে ভরা জীবনের গল্প।
তার ইউটিউব চ্যানেলে গান করে এ পর্যন্ত অনেকেই ভাইরাল হয়েছেন। ভাইরাল হওয়া এসব লোকশিল্পীরা এখন স্বপ্ন দেখছেন নিজেদের ভাগ্য বদলের।
ঢাকায় বসবাস করলেও কুদ্দুস বয়াতী সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন নিজ এলাকার লোকসংস্কৃতির উর্বরভূমি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার লোকশিল্পীদের নিয়ে। লোকশিল্পীদের খোঁজখবর নিতে এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশা নিজের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তুলে ধরতে মাঝে মাঝেই গ্রামে পাড়ি জমান তিনি। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত লোকশিল্পীদের খুঁজে বের করেন এবং ছুটে যান তাদের বাড়িতে।
জানা যায়, ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রাপ্ত অর্থ অসহায় এসব শিল্পীর মাঝে বিলিয়ে দেন কুদ্দুস বয়াতী। এ ছাড়া যেসব শিল্পী তার চ্যানেলে গান করে ভাইরাল হয়েছেন, তাদেরও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন বয়াতী। আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন স্থানীয় মসজিদ-মাদরাসাসহ এতিমদের সেবায়ও।
দেশবরেণ্য লোকশিল্পী কুদ্দুস বয়াতীর এমন কর্মকাণ্ডে দারুণ খুশি অসহায় লোকশিল্পীরা। তাই যখনই কুদ্দুস বয়াতীর নিজ এলাকায় আগমনের সংবাদ পান সুবিধাবঞ্চিত শিল্পীরা, তারা তার বাড়িতে গিয়ে ভিড় জমান।
৭০ বছরের নুরু পাগলা থেকে শুরু করে ‘কুদ্দুস বয়াতী’ চ্যানেলে গান করে ভাইরাল হয়েছেন অলিউল্লাহ বয়াতী, আশিক বয়াতী, জসিম বয়াতী, গোলাম মোস্তফা, বাউল শামীম ও বাউল সালাম সরকারসহ অনেকেই।
এ বিষয়ে কুদ্দুস বয়াতী বলেন, তিনি জীবনে বহু সংগ্রাম করে এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তাই লোকশিল্পীদের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন। লোকশিল্পীদের অধিকাংশই অসচ্ছল ও অসহায়। তারা নিজের জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকে আছেন। অনেকেই বর্তমানে অসুস্থ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। কারও ঘরে ভাত নেই। পরিবার নিয়ে কেউ কেউ আবার মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এ জন্যই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রাপ্ত অর্থ অসহায় লোকশিল্পীসহ এলাকার মসজিদ-মাদরাসায় বিলিয়ে দিয়ে আসছি। একটি এতিম মেলা করার দায়িত্ব নিয়েছি। তবে আমার একার পক্ষে সারাদেশের লোকশিল্পীদের সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। এ জন্য দেশের বিত্তশালী লোকজন ও সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। তবেই অসহায় লোকশিল্পীরা বেঁচে থাকবে।