বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ৫ নারী
- আপডেট টাইম : ০৬:২৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
- / 88
করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রতিবছরের মতো এ বছরেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বব্যাপী ১০০ বছরের ও বেশি সময় ধরে নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদযাপন করে আসছেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আজ আমরা জানবো বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ৫ নারীর গল্প।
অ্যাঙ্গেলা মার্কেল
অ্যাঙ্গেলা মার্কেলকে বলা হয় মুক্ত বিশ্বের চ্যান্সেলর। গত এক যুগ ধরে তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিউন ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপ্রধান। দৃঢ় নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং সাম্প্রতিক অভিবাসী সমস্যা সমাধানে তার ভূমিকার জন্য তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিফ্যাক্টো লিডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বস্তুগত রসায়নে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী প্রাক্তন এই গবেষক-বিজ্ঞানী রাজনীতিতে যোগ দেন ১৯৮৯ সালে। ১৯৯১ সালে তিনি মহিলা ও যুবকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ১৯৯৪ সালে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০০০ সালে তিনি তার দল সিডিইউয়ের প্রধানের পদ লাভ করেন। ২০০৫ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করার পর জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে সরকার গঠন করেন। এরপর ২০০৯ এবং ২০১৩ সালের নির্বাচনেও তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। অ্যাঞ্জেলা মার্কেল মোট রেকর্ড সংখ্যক দশ বার ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মহিলার তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছেন। এছাড়াও তিনি ফোর্বসের বিবেচনায় দু’বার বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে তিনি টাইম ম্যাগাজিনে ‘পার্সন অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবে নির্বাচিত হন। টাইস ম্যাগাজিন তাকে ‘চ্যান্সেলর অফ দ্য ফ্রি ওয়ার্ল্ড’ উপাধিতে ভূষিত করে।
মেলিন্ডা গেটস
মেলিন্ডা গেটসের পরিচয় তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটসের স্ত্রী এবং তার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সর্বময় কর্তী। তবে বর্তমানে তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সহ-সভাপতি। বিশ্বব্যাপী তার জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য এর আগেও একাধিকবার ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় সেরা দশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি এবং বিল ক্লিনটন টাইমম্যাগাজিনর ‘পার্সনস অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া তিনি ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলান্দে তাকে এবং বিল ক্লিনটনকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার ‘লেজিয়ন অব অনারে’ ভূষিত হন।
শেরিল স্যান্ডবার্গ
শেরিল স্যান্ডবার্গ বর্তমান বিশ্বের ব্যবসায়িক জগতের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। পূর্বে তিনি গুগলের ‘অনলাইন সেলস অ্যান্ড অপারেশন্স’ বিভাগের সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার। ২০০৮ সাল থেকেই তিনি এই পদে কর্মরত আছেন। সফলভাবে বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফেসবুককে একটি অত্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ব্যাপারে তার বিশাল অবদান আছে। ২০১২ সালে তিনি প্রথম নারী হিসেবে ফেসবুকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি একইসঙ্গে একজন নারী অধিকার কর্মীও।
ম্যারি বারা
ম্যারি বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মোটরস কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং সিইও। ২০১৪ সালে কোম্পানিটির সিইওর দায়িত্ব পাওয়া ম্যারি বারা ছিলেন মোটরগাড়ি শিল্পের প্রধান কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রথম মহিলা সিইও। সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে তিনি কোম্পানিটির ক্রয় এবং সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি এখনও পর্যন্ত মোট ছ’বার ফোর্বসের ক্ষমতাশালী নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের বিশ্বের ক্ষমতাধর মহিলার তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনাকে ‘লেডি অব ঢাকা’ আখ্যায়িত করে ফোর্বস লিখেছে, তিনি রোহিঙ্গা জনগণের সাহায্যের অঙ্গীকার করেন এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য দুই হাজার একর ভূমি বরাদ্দ করেন, যা মিয়ানমারের অং সান সু চি’র সম্পূর্ণ বিপরীত। এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের গণহত্যার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বিপুল ব্যয় সত্তে¡ও তার দেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে গৌরববোধ করছেন এবং ইতিমধ্যেই তাদের আইডেন্টিফিকেশন কার্ড এবং শিশুদের টিকাদান করা হয়েছে। এছাড়া, নিন্ম আয়ের দেশ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করার পেছনে ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ ক্ষ্যাত শেখ হাসিনার অবদান অতুলনীয়।
নিউজ লাইট ৭১