ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথমবারের মতো চলল ট্রেন পাবনা-ঢালারচর

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৯
  • / 115

ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের নবনির্মিত পাবনা-ঢালারচর সেকশনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করেছে। ‘ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের’ আওতায় রেলপথটি নির্মাণ করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার সকালে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে পাবনায় পরীক্ষামূলকভাবে এসে পৌঁছায়। পরে সকাল সোয়া ১০টায় পাবনা স্টেশন অতিক্রম করে দুপুরে ঢালারচর গিয়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করে ফের সন্ধ্যায় ফিরে আসে।

সকাল ৯টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে ট্রেনটি এক ঘণ্টায় পাবনা স্টেশনে পৌঁছায়। পাবনা স্টেশন ছাড়ার পর নবনির্মিত রাঘবপুর, দুবলিয়া, তাঁতীবন্দ, চিনাখড়া, কাশিনাথপুর হয়ে বাঁধেরহাট এবং ঢালারচর এসে পৌঁছায়। এই সময় প্রতিটি নতুন স্টেশনে প্লাটফর্মের উচ্চতা, শেডের উচ্চতাসহ লাইটিং ও রেললাইন স্থাপনের গভীরতা পরীক্ষা করেন রেলওয়ে প্রকৌশলীরা।

নবনির্মিত সেকশনে ১০টি কোচ নিয়ে এই রেল সেকশনে ২৫ জন কর্মকর্তাসহ অর্ধ-শতাধিক রেলওয়ে কর্মচারী দল নিয়ে সকালে যাত্রা শুরু করে। ওই ট্রেনের পরিচালক ছিলেন আফজাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ছিলেন আবু হানিফ। ট্রেনে লোকোমাস্টার (এলএম) চালক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন রবিউল ইসলাম ও সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম) শাকিল আহমেদ।

এদিকে এই অঞ্চলে প্রথমবারের মতো ট্রেন দেখে উৎসুক জনতা ছুটে আসেন, একঝলক ট্রেন চলাচল দেখতে। জীবনের প্রথমবারের মতো অনেক শিশুরা ট্রেন দেখে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
   
প্রকল্প পরিচালক ও বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। সে সময় জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়।

 ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের পাবনা পর্যন্ত, প্রথম ধাপে ২৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ হওয়ার পর গতবছর থেকে পাবনা-রাজশাহী রেলরুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। মোট ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলরুটের বাকি ৫৩ কিলোমিটারের নির্মাণ দ্বিতীয় ট্রেন চলাচলের জন্য যাবতীয় স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সরকারি পরিদর্শক ডি এন মজুমদার জানান, পরীক্ষামূলকভাবে পরিদর্শন ট্রেন চলাচলের প্রতিবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক হবে। তবে এই রুট চালু করতে নতুন রেলস্টেশনে, নতুন কোচ, লোকবলও প্রয়োজন।

ঢালারচর-পাবনা-ঈশ্বরদী রেলরুটে পূর্ণাঙ্গ ট্রেন চলাচল শুরু করা এখন এলাকাবাসীর দাবি হয়ে উঠেছে। ঢালারচর পূর্বের বিখ্যাত ঘাট নগরবাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় অনেকেই আরিচা থেকে যমুনা নদী নৌযানে পার হয়ে নগরবাড়ি ঘাটে এসে ঢালারচর থেকে ট্রেনযোগে সুবিধাজনক গন্তব্যে যাবেন।

Tag :

শেয়ার করুন

প্রথমবারের মতো চলল ট্রেন পাবনা-ঢালারচর

আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের নবনির্মিত পাবনা-ঢালারচর সেকশনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করেছে। ‘ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের’ আওতায় রেলপথটি নির্মাণ করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার সকালে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে পাবনায় পরীক্ষামূলকভাবে এসে পৌঁছায়। পরে সকাল সোয়া ১০টায় পাবনা স্টেশন অতিক্রম করে দুপুরে ঢালারচর গিয়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করে ফের সন্ধ্যায় ফিরে আসে।

সকাল ৯টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে ট্রেনটি এক ঘণ্টায় পাবনা স্টেশনে পৌঁছায়। পাবনা স্টেশন ছাড়ার পর নবনির্মিত রাঘবপুর, দুবলিয়া, তাঁতীবন্দ, চিনাখড়া, কাশিনাথপুর হয়ে বাঁধেরহাট এবং ঢালারচর এসে পৌঁছায়। এই সময় প্রতিটি নতুন স্টেশনে প্লাটফর্মের উচ্চতা, শেডের উচ্চতাসহ লাইটিং ও রেললাইন স্থাপনের গভীরতা পরীক্ষা করেন রেলওয়ে প্রকৌশলীরা।

নবনির্মিত সেকশনে ১০টি কোচ নিয়ে এই রেল সেকশনে ২৫ জন কর্মকর্তাসহ অর্ধ-শতাধিক রেলওয়ে কর্মচারী দল নিয়ে সকালে যাত্রা শুরু করে। ওই ট্রেনের পরিচালক ছিলেন আফজাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ছিলেন আবু হানিফ। ট্রেনে লোকোমাস্টার (এলএম) চালক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন রবিউল ইসলাম ও সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম) শাকিল আহমেদ।

এদিকে এই অঞ্চলে প্রথমবারের মতো ট্রেন দেখে উৎসুক জনতা ছুটে আসেন, একঝলক ট্রেন চলাচল দেখতে। জীবনের প্রথমবারের মতো অনেক শিশুরা ট্রেন দেখে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
   
প্রকল্প পরিচালক ও বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। সে সময় জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়।

 ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের পাবনা পর্যন্ত, প্রথম ধাপে ২৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ হওয়ার পর গতবছর থেকে পাবনা-রাজশাহী রেলরুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। মোট ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলরুটের বাকি ৫৩ কিলোমিটারের নির্মাণ দ্বিতীয় ট্রেন চলাচলের জন্য যাবতীয় স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সরকারি পরিদর্শক ডি এন মজুমদার জানান, পরীক্ষামূলকভাবে পরিদর্শন ট্রেন চলাচলের প্রতিবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক হবে। তবে এই রুট চালু করতে নতুন রেলস্টেশনে, নতুন কোচ, লোকবলও প্রয়োজন।

ঢালারচর-পাবনা-ঈশ্বরদী রেলরুটে পূর্ণাঙ্গ ট্রেন চলাচল শুরু করা এখন এলাকাবাসীর দাবি হয়ে উঠেছে। ঢালারচর পূর্বের বিখ্যাত ঘাট নগরবাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় অনেকেই আরিচা থেকে যমুনা নদী নৌযানে পার হয়ে নগরবাড়ি ঘাটে এসে ঢালারচর থেকে ট্রেনযোগে সুবিধাজনক গন্তব্যে যাবেন।