ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক নারী আইনজীবী অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯
  • / 176

‘চিৎকার করলে শিলপাটার আঘাত, সারা শরীর থেঁতলে গেছে’ এভাবেই স্বামীর লোমহর্ষক ও অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন মানিকগঞ্জের এক নারী আইনজীবী।


ভুক্তভোগী ওই নারী মানিকগঞ্জ জেলা জজকোর্টের আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু। বিয়ের এক মাসের মধ্যে প্রতারক স্বামীর ১৫ দিনের বন্দিদশা থেকে ফিরে এসে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি।

নির্যাতিত ওই নারী আইনজীবী জানান, স্বামী আমাকে প্রতিদিন মারত। চিৎকার করলে শিলপাটা দিয়ে আঘাত করত। সারা শরীর থেঁতলে গেছে ওই আঘাতে। আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আত্মহত্যার।

কিন্তু সেই সুযোগও পাইনি। আমি সেখান থেকে জীবিত ফিরে আসতে পারব সে আশা ছিল ক্ষীণ।

বন্দিদশা থেকে ফিরে এসে সোমবার রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় প্রতারক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু।

মামলার এজাহারে কামরুন্নাহার সেতু উল্লেখ করেন, ‘মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগরে গ্রামে মো. শাওন মিয়া সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এর পর ৯ সেপ্টেম্বর শাওন তাকে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করে। আর বিয়ের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে। মান সম্মানের ভয়ে, বিয়ের বিষয়টি কাউকে কিছু বলি নাই।’

ওই নারী জানালেন, ১৭ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জজকোর্ট থেকে কথা আছে বলে শাওন তাকে তার প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নবীনগর কহিনুর গেটের তুনু হাজীর ৬ তলা বাড়ির ৪ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়।

সেখানে প্রথম দু’দিন তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। তিনি বলেন, ৩য় দিন তার মানিকগঞ্জ ডাকঘরে থাকা কয়েকটি হিসাব থেকে তাকে টাকা উঠিয়ে দিতে বলে।

তার কাছে অস্ত্র আছে, ভয়ে তিনি তাকে ৫ লাখ, ১০ লাখ এবং ১ লাখ করে ৩ বার টাকা উঠিয়ে দিতে বাধ্য হন। এর দুদিন পর শাওন তার কাছে আরও টাকা চায়। তার কাছে আর সঞ্চিত টাকা নেই জানালে সে তাকে তার নামে থাকা জমি লিখে দিতে বলে।

তিনি তাকে জমি লিখে না দেয়ায় তার ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। তার কাছ থেকে নিয়ে নেয় মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স।

তার পর তাকে বিবস্ত্র করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে এবং তার শেখানো কথা বলিয়ে তারও ভিডিও রেকর্ড করে। সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

জবাই করতে রান্নাঘর থেকে বঁটি আনতে গেলে সে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা চলে আসে। বাড়ির মালিক এসে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।

Tag :

শেয়ার করুন

এক নারী আইনজীবী অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন

আপডেট টাইম : ১০:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯

‘চিৎকার করলে শিলপাটার আঘাত, সারা শরীর থেঁতলে গেছে’ এভাবেই স্বামীর লোমহর্ষক ও অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন মানিকগঞ্জের এক নারী আইনজীবী।


ভুক্তভোগী ওই নারী মানিকগঞ্জ জেলা জজকোর্টের আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু। বিয়ের এক মাসের মধ্যে প্রতারক স্বামীর ১৫ দিনের বন্দিদশা থেকে ফিরে এসে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি।

নির্যাতিত ওই নারী আইনজীবী জানান, স্বামী আমাকে প্রতিদিন মারত। চিৎকার করলে শিলপাটা দিয়ে আঘাত করত। সারা শরীর থেঁতলে গেছে ওই আঘাতে। আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আত্মহত্যার।

কিন্তু সেই সুযোগও পাইনি। আমি সেখান থেকে জীবিত ফিরে আসতে পারব সে আশা ছিল ক্ষীণ।

বন্দিদশা থেকে ফিরে এসে সোমবার রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় প্রতারক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু।

মামলার এজাহারে কামরুন্নাহার সেতু উল্লেখ করেন, ‘মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগরে গ্রামে মো. শাওন মিয়া সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এর পর ৯ সেপ্টেম্বর শাওন তাকে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করে। আর বিয়ের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে। মান সম্মানের ভয়ে, বিয়ের বিষয়টি কাউকে কিছু বলি নাই।’

ওই নারী জানালেন, ১৭ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জজকোর্ট থেকে কথা আছে বলে শাওন তাকে তার প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নবীনগর কহিনুর গেটের তুনু হাজীর ৬ তলা বাড়ির ৪ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়।

সেখানে প্রথম দু’দিন তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। তিনি বলেন, ৩য় দিন তার মানিকগঞ্জ ডাকঘরে থাকা কয়েকটি হিসাব থেকে তাকে টাকা উঠিয়ে দিতে বলে।

তার কাছে অস্ত্র আছে, ভয়ে তিনি তাকে ৫ লাখ, ১০ লাখ এবং ১ লাখ করে ৩ বার টাকা উঠিয়ে দিতে বাধ্য হন। এর দুদিন পর শাওন তার কাছে আরও টাকা চায়। তার কাছে আর সঞ্চিত টাকা নেই জানালে সে তাকে তার নামে থাকা জমি লিখে দিতে বলে।

তিনি তাকে জমি লিখে না দেয়ায় তার ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। তার কাছ থেকে নিয়ে নেয় মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স।

তার পর তাকে বিবস্ত্র করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে এবং তার শেখানো কথা বলিয়ে তারও ভিডিও রেকর্ড করে। সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

জবাই করতে রান্নাঘর থেকে বঁটি আনতে গেলে সে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা চলে আসে। বাড়ির মালিক এসে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।