সবাই অনুপ্রবেশকারী নন: ওবায়দুল কাদের
- আপডেট টাইম : ১১:৫৮:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৯
- / 97
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছাড়া যারা আওয়ামী লীগে এসেছেন তারা অনুপ্রবেশকারী নন- এমন মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমাদের পার্টিতে যারা এসেছেন তাদের সবাই অনুপ্রবেশকারী নয়। অনেক ক্লিন ইমেজের (স্বচ্ছ ভাবমূর্তি) লোকও আমাদের পার্টিতে এসেছে। এদের সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড যদি না থাকে এবং কোনো প্রকার মামলা মোকদ্দমা, অপরাধমূলক কাজে এদের সংশ্লিষ্টতা যদি না থাকে; সেইসব লোক অবশ্যই অনুপ্রবেশকারী নয়।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে করণীয় নিয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে, শুধু তাদের ব্যাপারেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ‘সিলেক্ট’ করার বিষয়ে নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। আট বিভাগে ৫ হাজারেরও বেশি অনুপ্রবেশকারী তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিতর্কিত ছাড়া আওয়ামী লীগে কেউ বাদ যায় না। দায়িত্বের পরিবর্তন হয় শুধু।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে এই সম্মেলন বাস্তবায়নে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের করণীয় কি, সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সারা দেশে আমাদের শাখা সংগঠনগুলো, জেলা-উপজেলা, থানা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুনভাবে করা হচ্ছে। সেই সব বিষয়ে আমাদের নেতারা বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা প্রতিনিধি সম্মেলনে গিয়েছিলাম তারপরও পত্র-পত্রিকায় রাজশাহীর খারাপ খবরে ভরে গেল। এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক। সম্মেলনকে সামনে রেখে সব তিক্ততার অবসান ঘটবে বলে আমি আশা করি। কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা হবে সুস্থ। অসুস্থ প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
আমি এখানে নেত্রীর পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কাছে মনে হয় এটা বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি। আমি এক কথায় এটাই বলব।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।
রাজশাহী জেলা আ’লীগের সম্মেলন ৪ ডিসেম্বর : আওয়ামী লীগের বৈঠকের পর একই স্থানে রাজশাহী জেলা নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় আগামী ৪ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নূরুল ইসলাম ঠান্ডু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে রাজশাহী জেলায় তৃণমূলে সম্মেলন করতে যাচ্ছি। সবচেয়ে প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কোনো সমস্যা না থাকলে, কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি না হয়ে থাকলে আওয়ামী লীগ একমাত্র সংগঠন যে ৩ বছর পরপর ঠিকমতো কাউন্সিল করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আমরা আগামী কাউন্সিল করে সুন্দর একটি কমিটি করে নতুন করে যাত্রা শুরু করব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বড় শক্তি জনগণ ও বঙ্গবন্ধু। সেই উদ্দেশ্যে একটি কাউন্সিল করা হবে এতে কোনো সমস্যা থাকলে তার সমাধান করা হবে। এ জন্য জাতীয় সম্মেলনের আগে শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন করা হচ্ছে।