মুশফিকের ব্যাটে ভারতের মাঠে বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস
- আপডেট টাইম : ১২:৩৫:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০১৯
- / 122
ভারতের মাঠে রোহিত শর্মাদের হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটে অতীতে ভারতের মাঠে জয় পায়নি বাংলাদেশ। ভারতের মাঠে জয় না পাওয়ার সেই খড়া কাটালেন মুশফিকুর রহিম। তার ব্যাটে ভারত জয় করল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় ভারতকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশ। দলের জয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন মুশফিকুর রহিম। তার ৪৩ বলের অপরাজিত ৬০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
তার আগে ভারত জয়ের ভিত গড়ে দেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও শফিউল ইসলামরা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ১৪৮ রানে ইনিংস গুটায় ভারত।
ভারতের বিপক্ষে ১৪৯ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারান লিটন কুমার দাস। দলীয় ১০ রানে ফেরেন তিনি। এরপর অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাইমকে সঙ্গে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়েন অন্য ওপেনার সৌম্য সরকার। ২৮ বলে ২৬ রান করে ফেরেন নাইম।
এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। তাদের জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। জয় থেকে ৩৫ রান দূরে থাকতেই আউট হন সৌম্য। খলিল আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ৩৫ বলে ৩৯ রান করা সৌম্য।
তবে সৌম্যর বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছেদেন মুশফিক।
ভারত ১৪৮/৬
শক্তিশালী ভারতকে তাদের মাঠেই কোণঠাসা করে রাখেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও আফিফ হোসেনরা। বাংলাদেশ দলের এ তরুণ বোলারদের মোকাবেলা করতে বেশ হিমশিম খেতে হয় রোহিত শর্মার মতো ভারতীয় অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের।
সাকিব-তামিমহীন তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে প্রত্যাশার ব্যাটিং করতে পারেনি ভারত। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
তবে ওপেনার শেখর ধাওয়ানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর শেষ দিকে করুনাল পান্ডিয়া ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তুলতে সক্ষম হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা দল ভারত।
রোববার দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। ভারত শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন শফিউল ইসলাম।
ভারত সেরা ওপেনার রোহিত শর্মাকে ইনিংসের প্রথম ওভারে ফেরান শফিউল। তার করা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লিউ হন রোহিত। আউটের সিদ্ধান্ত দিতে সময় নেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি বিরাট কোহলির পরিবর্তে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেয়া রোহিত শর্মা। দলীয় মাত্র ১০ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর তিনে ব্যাটিংয়ে নামা লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন অন্য ওপেনার শেখর ধাওয়ান। ২০ রানের ব্যবধানে আউট হয়ে ফেরেন রাহুল।
বাংলাদেশ দলের তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই তুলে নেন রাহুলের উইকেট। তার করা সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে শর্ট কাভারে ফিল্ডিং করা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন রাহুল। তার বিদায়ে ৬.৩ ওভারে ৩৬ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর ভারতীয় তরুণ তারকা ব্যাটসম্যান স্রেয়াশ আয়ারকে দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিপ্লব। তার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাইমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন স্রেয়াশ।
ইনিংসের শুরু থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যাওয়া শেখর ধাওয়ানকে রান আউটের ফাঁদে ফেরেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক রিয়াদ। তার আগে ৪২ বলে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করে ফেরেন শেখর।
জাতীয় দলের তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন শুভম দুবে। বাংলাদেশ সিরিজে অভিষেক হওয়া ভারতীয় এ তরুণকে ক্যারিয়ারের শুরুর ম্যাচে মাত্র ১ রানে আউট করেন আফিফ।
বাংলাদেশ দলের এ তরুণ অলরাউন্ডারের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেটের ওপর ক্যাচ তুলে দেন শুভম। বল ডেলিভারি দেয়ার পরও সামান্য ওপরে ওঠা বলটি দক্ষতার সঙ্গে তালুবন্দি করেন আফিফ। দলীয় ১০২ রানে ভারতীয় পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন শুভম। ২৬ বলে ২৭ রান করা রিশব প্যান্টকে দ্বিতীয় শিকারে পরিনত করেন শফিউল।
১৮.২ ওভারে ৬ উইকেটে ১২০ রান করা ভারতকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে শেষ দিকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান করুনাল পান্ডিয়া-ওয়াশিংটন সুন্দর। তারা শেষ দিকে মাত্র ১০ বল মোকাবেলা করে এক চার ও তিন ছক্কায় ২৮ রান তুলে নেন। তাদের কারণেই ১৪৮ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত।