ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল ও ভুটান

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০২০
  • / 73

বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল ও ভুটান। এরইমধ্যে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও ভুটান এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে। তবে সৌদি আরব ও নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব না দিলেও ব্যান্ডউইথ কেনার ব্যাপারে অনানুষ্ঠানিক আগ্রহের কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ বিষয়টি তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে- বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সংযুক্ত হন। বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে তৃতীয় সাবমেরিন  কেব্ল সিস্টেম স্থাপনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। 

সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর হতে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত ঝঊঅ-গঊ-ডঊ-৬ সাবমেরিন কেব্লটি ভারত মহাসাগর, আরবসাগর, লোহিতসাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে। কেব্লটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকায় ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটি অক্টোবর ২০২০ হতে জুন ২০২৪ সাল নাগাত সময়ে বাস্তবায়িত হবে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে ড. শামসুল আলম জানান, প্রকল্পটি গ্রহণ করায়  প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। কারণ এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কীভাবে নেবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে জানতে চেয়েছেন।

সিনিয়র সচিব আরো বলেন, একদিকে দেশে প্রতিনিয়ত ব্যান্ডউইথের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে, ২০২৫ সালে একটি সাবমেরিন কেব্ল অকেজো হয়ে যাবে। তাই এ প্রকল্পটি সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের আওতায় সাবমেরিন কেব্ল ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি সংগ্রহপূর্বক স্থাপন করা হবে। ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার  কোর সাবমেরিন কেব্ল স্থাপনসহ ১,৮৫০ কি: মি: ব্রাঞ্চ সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন করা হবে।

বৈঠকে (একনেক) ২ হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংস্থান করা হবে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো-পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুুক্তি মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প এব; ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলি-যোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন’ প্রকল্প এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স এ্যান্ড সার্ভিসেস (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

এছাড়া, সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল ও ভুটান

আপডেট টাইম : ০৫:৫৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০২০

বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল ও ভুটান। এরইমধ্যে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও ভুটান এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে। তবে সৌদি আরব ও নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব না দিলেও ব্যান্ডউইথ কেনার ব্যাপারে অনানুষ্ঠানিক আগ্রহের কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ বিষয়টি তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে- বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সংযুক্ত হন। বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে তৃতীয় সাবমেরিন  কেব্ল সিস্টেম স্থাপনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। 

সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর হতে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত ঝঊঅ-গঊ-ডঊ-৬ সাবমেরিন কেব্লটি ভারত মহাসাগর, আরবসাগর, লোহিতসাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে। কেব্লটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকায় ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটি অক্টোবর ২০২০ হতে জুন ২০২৪ সাল নাগাত সময়ে বাস্তবায়িত হবে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে ড. শামসুল আলম জানান, প্রকল্পটি গ্রহণ করায়  প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। কারণ এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কীভাবে নেবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে জানতে চেয়েছেন।

সিনিয়র সচিব আরো বলেন, একদিকে দেশে প্রতিনিয়ত ব্যান্ডউইথের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে, ২০২৫ সালে একটি সাবমেরিন কেব্ল অকেজো হয়ে যাবে। তাই এ প্রকল্পটি সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের আওতায় সাবমেরিন কেব্ল ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি সংগ্রহপূর্বক স্থাপন করা হবে। ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার  কোর সাবমেরিন কেব্ল স্থাপনসহ ১,৮৫০ কি: মি: ব্রাঞ্চ সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন করা হবে।

বৈঠকে (একনেক) ২ হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংস্থান করা হবে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো-পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুুক্তি মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প এব; ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলি-যোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেব্ল স্থাপন’ প্রকল্প এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স এ্যান্ড সার্ভিসেস (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

এছাড়া, সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজ লাইট ৭১