পাকিস্তানি সেনারা যৌন নিপীড়নে এগিয়ে
- আপডেট টাইম : ০৯:৩০:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৯
- / 117
কয়েক মাস আত্মগোপনে থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন পাকিস্তানের সমাজকর্মী গুলালাই ইসমাইলি (৩৩)। রাজনৈতিক আশ্রয় হয়তো তিনি পেয়ে যাবেন। কিন্তু পাকিস্তানে তার বৃদ্ধ মা-বাবা ভয়ংকর দিন পার করছেন।
গত বৃহস্পতিবার সাদা পোশাকে সেনাসদস্যরা ইসলামাবাদের বাড়িতে যান। গুলালাইয়ের মা-বাবাকে ‘কথা বলার’ জন্য বাইরে আসতে বলেন। তারা না বললে চলে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর ফের আসেন। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘আমি তাদের বলি তোমাদের হাতে অস্ত্র, ইউনিফর্ম নেই। আমরা আসব না।’ সেনা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বললে নির্যাতনের অতীত অনুযায়ী, গুলালাইয়ের মা-বাবার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত জামিন দিলেও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গুলালাইয়ের পরিবার পশতুন আন্দোলন (পিটিএম) সমর্থন করে। সীমান্তে সন্ত্রাসবিরোধী সেনা অভিযানে তারা সংকটাপন্ন। লাখো পশতুন বাস্তুচ্যুত; হাজারো বিশেষ করে যুবারা গুম, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের নিয়ে যায়।
গুলালাই যেদিন সেনাদের বিরুদ্ধে পশতুন উপজাতি, বিশেষ করে ওজিরিস্তান অঞ্চলে নারীদের যৌন নিপীড়নের সমালোচনা করেন, সেদিন থেকেই সমস্যার শুরু বলে মনে করেন তার কমিউনিস্ট বাবা, ‘ওজিরিস্তানের এক তরুণী সেনাদের যৌন নৃশংসতা তুলে ধরেন। এরপর গুলালাই তাদের সহায়তার ঘোষণা দেয়।’
বর্তমান সেনা কার্যক্রমকে মোহাম্মদ ইসমাইল ১৯৮০ সালে স্বৈরশাসক জেনারেল মোহাম্মদ জিয়া-উল হকের সঙ্গে তুলনা করেন। ওই সময় জিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে সোভিয়েত থেকে আলাদা হতে আফগানিস্তানের ইসলামিক জঙ্গিদের অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেন। এদেরই একজন ওসামা বিন লাদেন পরে আল-কায়েদা গঠন করেন। তারপর তো আফগান যুদ্ধে জন্ম নিল তালেবান। কিন্তু এখনো সরকার ভালো ও খারাপ তালেবান বাছাই করে প্রতিবেশী আফগানিস্তান ও ভারত শায়েস্তার জন্য সম্পর্ক রেখে চলছে।
যদিও লিখিত জবাবে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল আসিফ গফুর তালেবানসহ জঙ্গিদের সমর্থনের অভিযোগ নাকচ করেন, ‘২০০০ সাল থেকে সেনাবাহিনী সীমান্তে পাকিস্তানের জন্য হুমকি গ্রুপগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে অভিযান চালাচ্ছে।’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ভুক্তভোগী কখনো সাংঘর্ষিক ওই এলাকা নিয়ে অভিযোগ করে না।’ তবে তার এ কথার সঙ্গে দ্বিমত গুলালাই, তার বাবা, পিটিএম ও দেশটির অন্য মানবাধিকারকর্মীদের। রাজনীতিক ও মানবাধিকারকর্মী বুশরা গহর বলেন, ‘ওজিরিস্তানের অনেক নারী ও শিশু তাদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর যৌন হয়রানি, হুমকি-ধমকির ভয়ংকর গল্প বলেছেন।’ জেনারেল আসিফ গফুর যৌন হয়রানির বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি না হলেও সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অস্বীকার করেন।