দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি প্রবাসী আল-আমিনকে হত্যার রহস্য উদঘাটন।
- আপডেট টাইম : ০৬:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২০
- / 68
৭১: দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি প্রবাসী আল-আমিনকে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে অপর পাঁচ বাংলাদেশি তাকে প্রথমে অপহরণ, পরে হত্যা করে কেপটাউনের সি পয়েন্টে বালিচাপা দিয়ে রাখে। ঘটনার পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত সুজন পলাতক রয়েছেন।
সি পয়েন্ট এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আল-আমিনের দেশের বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায়। ২০১৮ সাল থেকে সুজন আ আল-আমিন ব্যবসা করে আসছিলেন। সম্প্রতি টাকা-পয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল সে সময় স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি মীমাংসা করে দিলেও সুজন বিষয়টি মেনে নেননি। তিনি প্রকাশ্যে আল-আমিনকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
আল-আমিনকে হত্যা করে বালিচাপা দেয়ার কিছু দিন পর মরদেহ নিয়ে কুকুরের টানাটানির ঘটনায় স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে এবং মরদেহটি উদ্ধার করে থানার হিমাগারে রাখা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পুলিশ মরদেহটির ছবি তুলে কেপটাউনের সি পয়েন্ট এলাকায় মানুষদের দেখাতে থাকলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া মরদেহ শনাক্ত করেন। আল-আমিন তার দোকানে এক সময় কাজ করতেন বলে তিনি জানান।
পরে বাবুল মিয়া নিহতের বড় ভাই রাসেলকে বিষয়টি অবহিত করলে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডেলবার্গ থেকে রাসেল তার প্রতিবেশী তিন পাকিস্তানি নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে কেপটাউনে এসে মরদেহটি তার ছোট ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন।
জানা গেছে, স্থানীয় পুলিশ এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে। আল-আমিনকে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সুজন বাংলাদেশ কমিউনিটি অব কেপটাউনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদের ছোট ভাই। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।
নিহতের ভাই রাসেল শনিবার সকালে জানান, মরদেহ কেপটাউনে দাফন করার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ এতটাই নষ্ট হয়ে গেছে যে স্বজনদের ইচ্ছে থাকলেও দেশে পাঠানো সম্ভব না।
রাসেল অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে আমার সঙ্গে আসা তিন পাকিস্তানি ছাড়া কেপটাউনের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দসহ কোনো বাংলাদেশিকে পাশে পাওয়া যায়নি। কেপটাউনে যারা বাংলা কমিউনিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা সবাই কোনো না কোনোভাবে প্রধান অভিযুক্ত সুজন বা তার বড় ভাই মাসুদের কাছের লোকজন।
তিনি আরও বলেন, সুজনের সঙ্গে আ-আমিনের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের বিষয়ে কিছু জানতাম না। তবে কেপটাউনে আসার পর শুনতে পারলাম, সুজন দীর্ঘদিন ধরে আল-আমিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিল।
রাসেল বলেন, কেপটাউন বাংলাদেশি কমিউনিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সহযোগিতা বা সুরাহা করা যাচ্ছে না। তারা অভিযুক্ত সুজন ও তার বড় ভাই মাসুদের হয়েই কাজ করছেন বলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে সুজন ও তার বড় ভাই মাসুদ গা ঢাকা দিয়েছেন। মাসুদ মোবাইল ফোনে কথা বললেও সামনে আসছেন না।
এসব বিষয়ে জানতে কেপটাউন কমিউনিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপে কল করা হলেও ফোন করেননি তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসীদের সংগঠন বাংলাদেশ পরিষদের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিষয়টি নিয়ে পরিষদের সবাই বেশ উদ্বিগ্ন। আ-আমিনের অপহরণ ও খুনের ঘটনাটির একটা সুষ্ঠু সমাধান হতে হবে।