ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষায় নানাবিধ রোগ।

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২০
  • / 113

৭১: ঋতুর হিসাবে বর্ষা চলে গেছে, কিন্তু বৃষ্টি চলছে। ঘন ঘন তাপমাত্রার ওঠানামা শরীরে প্রভাব ফেলছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই ফ্লু-জাতীয় রোগব্যাধি বেড়ে যায়। প্রায় সব পরিবারেই এই সময় কেউ না কেউ সর্দি, কাশি, জ্বরে ভোগে।

এর মধ্যে রয়েছে করোনার ভয়। এখানেই শেষ নয়, এই মৌসুমে কিন্তু মশাবাহিত রোগের উপদ্রবও বেড়ে যায়। বৃষ্টিতে বন্যা-জলাবদ্ধতা সঙ্গে করে নিয়ে আসছে নানা রোগের জীবাণু।

এসময় শিশুর দিকে বাবা-মায়ের বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানির ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।

বর্ষার রোগগুলো মূলত পানিবাহিত। এ মৌসুমে বড় শহরগুলোতে পানি জমছে, জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় সুয়্যারেজ লাইনের দূষিত বর্জ্য পানির লাইনে চলে আসছে। এতে ডায়রিয়া, কলেরা, রোটা ভাইরাসের জীবাণু পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে।

আবার বন্যার্ত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই দূষিত পানি পান করে মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত
হচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা সহজেই এসব জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।

এছাড়া পানি দূষণের কারণে শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড, জন্ডিস (হেপাটাইটিস এ ও ই), রক্ত আমাশায়— এসব রোগেরও প্রকোপ বাড়ে। দূষিত পানিতে গোসলের কারণে চুলকানি, খোস-পাঁচড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালে শহরগুলোতে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। পানিবাহিত পেটের অসুখের পাশাপাশি এ মৌসুমে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা জন্মায়।

এই বছর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা মহামারি, চিকুনগুনিয়া রোগবাহী এডিস মশা। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে অনেকের মৌসুমি হাঁপানি বাড়ে। বিশেষ করে শিশুদের অনেকে ব্রঙ্কিওলাইটিসের কারণে তীব্র কাশিতে ভোগে।

বর্ষার মৌসুমে সাতটা রোগ বেশি দেখা দেয়—
ইনফ্লুয়েঞ্জা : অপুর ইনফ্লুয়েঞ্জা দিয়েই কথা বলা শুরু তাই ওই অসুখটার কথাই প্রথমে বলা যাক। বর্ষায় শিশুদের ক্ষেত্রে এটা খুব সাধারণ একটা সমস্যা। সাধারণ জীবাণুঘটিত অসুখই বলা যায় একে। কারণ বাতাসে এই অসুখের জীবাণু প্রচুর ছড়িয়ে থাকে। বর্ষাকালে সেগুলো বাড়বাড়ন্ত হয়। শুধু শিশুদের কেন, বড়দেরও নাক বা মুখ দিয়ে এই জীবাণু ঢুকে শরীরে রোগবালাই বাড়িয়ে দিতে পারে।

লক্ষণ : প্রচণ্ড সর্দি, সঙ্গে জ্বর। গলা ভেঙে যায় বহু বাচ্চার ক্ষেত্রেই। শরীরে ব্যথাও হয় এর বাড়াবাড়ি হলে।

সাবধানতা : শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি থাকে, শিশুর শরীর এই ভাইরাসের সঙ্গে ততো ভালো করে মোকাবিলা করতে পারে। ফলে ওকে পুষ্টিকর তো বটেই পাশাপাশি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে দিন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ডায়েট-চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন। অসুখটা হলে চিকিৎসকই বলে দিতে পারবেন, কী-কী ওষুধ খাওয়াতে হবে।

ডেঙ্গু : বর্ষাকালে মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। এখন তো ডেঙ্গির (ডেঙ্গু ) বেশ বাড়াবাড়ি হয়েছে।

কারণ : মশা এই রোগের জীবাণুর বাহক। মশার কামড় থেকে ছোটদের তো বটেই বড়দেরও এই রোগ হতে পারে।

লক্ষণ : প্রচণ্ড জ্বর। তার সঙ্গে গিঁটে-গিঁটে ব্যথা। সারা শরীরের পেশি নাড়ানোর মতো ক্ষমতাও থাকে না। শিশুরা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। মাথায় যন্ত্রণা হয়। কিছু ক্ষেত্রে শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে।

সাবধানতা : জানালা-দরজা বন্ধ করে এয়ার কন্ডিশনার চালিয়া শিশুকে রাখার ব্যবস্থা না-থাকলে মশারির মধ্যে রাখুন। ঘরে মশা তাড়ানোর তেল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু তার সব কটি শিশুদের জন্য ভালো নয়। কোন তেল ব্যবহার করলে শিশুর ক্ষতি হবে না, তা বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নিন। শিশু এই রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। নাহলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে।

ম্যালেরিয়া : এটিও মশাবাহিত রোগ। বর্ষাকালের সবচেয়ে কমন অসুখ। কারণ বর্ষায় এখানে-সেখানে জমে থাকা জলে মশা সহজে বংশবিস্তার করে। মেয়ে অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়।

লক্ষণ : শুরু হয় হালকা জ্বর দিয়ে। তারপর ক্রমশ উত্তাপ বাড়তে থাকে। ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ নির্দিষ্ট সময় অন্তর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এই অসুখের কারণে।

সাবধানতা : ডেঙ্গির মতো এক্ষেত্রেও শিশুকে মশারির মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। বাড়ির চারপাশে পানি জমে থাকতে দেবেন না। শিশু ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত কি না, তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই টের পাওয়া যায়। এ অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের কোর্স করাতেই হবে।

টাইফয়েড : বর্ষার অতি পরিচিত অসুখ। মূলত জলবাহিত রোগ।

কারণ : বর্ষাকালে অপরিচ্ছন্নতা থেকে এই রোগ ছড়ায়। জলে বা অশুদ্ধ খাবারে টাইফয়েডের জীবাণু বেশি জন্মায়। তা শিশুর পেটে গেলেই টাইফয়েড জাঁকিয়ে বসবে।

লক্ষণ : জ্বর, পেটেব্যথা এই রোগের প্রধান লক্ষণ। জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত হলে মাথাব্যথাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

সাবধানতা : টাইফয়েডের জীবাণু তাড়ানো খুব কঠিন। অসুখ সেরে গেলেও গলব্লাডারে এই জীবাণু থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এই রোগ থেকে খুব সাবধান। শিশুকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। পরিষ্কার জল আর খাবারও খাওয়ান। কেউ টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে, তাকে বাকিদের থেকে দূরে রাখতে হবে। অন্য ঘর হলে সবচেয়ে ভালো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে চিকিৎসা করাতে হবে আক্রান্তর।

গ্যাসট্রোএনটেরাইটিস : বর্ষাকালে জীবাণুঘটিত রোগের অন্যতম। সহজ কথায় যাকে বলে পেটের গোলমাল।

কারণ : বর্ষাকালে শিশুরা অপরিচ্ছন্ন হাতে কোনও খাবার খেলে বা হাত মুখে দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে একসঙ্গে নানাবিধ জীবাণুর আক্রমণে এই অসুখ হয়।

লক্ষণ : পেটে ব্যাপক গণ্ডগোলে এর প্রধান লক্ষণ। পাশাপাশি বহু শিশুরই বমি হতে থাকে। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে।

সাবধানতা : শিশুকে সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। দেখুন যেন নোংরা হাতে কোনো খাবার না খায়। ফিল্টার করা পানি খাওয়ান। একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে ওকে মশলাপাতি দেয়া খাবার বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার দেবেন না। চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন ওষুধের তালিকা। এমনকী এই রোগের সূত্র ধরে পরে  কলেরা পর্যন্ত হতে পারে। তাই সে বিষয়েও সাবধান থাকুন।

হেপাটাইটিস-এ : জলবাহিত রোগ। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও হতে পারে (হেপাটাইটিস-এ)।

কারণ : অপরিশুদ্ধ জল থেকে তো বটেই, পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির মল থেকেও এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। মলের ওপর মাছি বা অন্য পতঙ্গ বসার পর সেগুলো যদি কোনো ফল বা খাবারে বসে, তা হলে সেখান থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লক্ষণ : জন্ডিসের মতো চোখ হলুদ হয়ে যায় অনেকের ক্ষেত্রেই। কারণ এই জীবাণু আক্রমণ করে মানুষের লিভারে। খিদে কমে যায়, বমি হতে থাকে এবং ভয়ংকর পেটে গোলমাল হয়।

সাবধানতা : শিশুদের ভ্যাকসিন দেয়াটা দরকারি। পাশাপাশি পরিশুদ্ধ জল এবং খাবার দিতে হবে। দরকার হলে ফুটিয়ে জল খাওয়াতে হবে। বাইরের কাটা ফল বা অন্য খাবার এই মরসুমে নয়। রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

লেপ্টোস্পিরোসিস : একে ওয়েলস সিনড্রমও বলে। বর্ষাকালে অপরিশুদ্ধ জল থেকে এই রোগ ছড়ায়।

কারণ : মূলত অপিরশুদ্ধ পানি থেকেই এই রোগ ছড়ায়। তবে শিশুরা মাঠে খেলার সময় কাদা মাখলে, সেই কাদা যদি কোনও কারণে মুখে যায়, তা হলেও এই অসুখ হতে পারে।

বর্ষায় সু্স্থ থাকতে মেনে চলুন : তীব্র গরমের পর যখন আকাশে কালো মেঘ দেখা দেয় তখন প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানুষ সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। তখন সবার চোখ যেন কালো মেঘের দেশে পাড়ি দেয়। যখন বর্ষার প্রথম ফোঁটাটা ধরিত্রীকে আলিঙ্গন করে তখন সোদা মাটির গন্ধের নেশা যেন শরীর, মন কাউকেই ছাড়তে চায় না। সেই সঙ্গে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ হলে তো পুরো বর্ষাটাই জমে ক্ষীর হয়ে যায়!

আনন্দের মাঝে সমস্যা তো থেকেই যায়। বর্ষাকাল মানেই চারদিকে জল জমে থাকে আর রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত অবস্থায় থাকে। এছাড়াও, বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গে নানারকম রোগের আবির্ভাব হয়। যেমন- বর্ষাকালে আমাদের বেশির ভাগেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়।

ফলে, নানারকম সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হজমের সমস্যা এবং মশার কামড়ঘটিত নানাবিধ রোগতো রয়েছেই। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনও দেখা দেয়। এইসময় বাতাসে এমনিতেই আর্দ্রতা বেশি থাকে।

বর্ষাকালে রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকায় প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেইজন্য রোজকার খাদ্যাভাসে সবচেয়ে বেশি যা থাকা প্রয়োজন তা হলো ভিটামিন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক খাবার ও ফল খাওয়া উচিত। আসুন দেখে নেয়া যাক, সুস্থ থাকতে বর্ষাকালে কোন কোন ফল খাওয়া যেতে পারে।

পেঁপে : এতে ভিটামিন-সি প্রচুর রয়েছে। পেঁপে আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে, ইমিউনিটি বাড়াতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আপেল : বর্ষাকালে প্রতিদিন একটি করে ফল খাওয়া খুবই ভালো। এতে অনেক রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এর মধ্যে আপেল খুবই উপকারী। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খাবারের তালিকায় একটি করে আপেল রাখা উচিত।

বেদানা : বেদানার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে। এছাড়া এটা মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে তোলে এবং হজমে সাহায্য করে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ন্যাসপাতি : এটিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরও ঠাণ্ডা রাখে। এছাড়া, জ্বর, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার থাকে।

পেয়ারা : পেয়ারাতে থাকে ভিটামিন-সি। ভিটামিন-সি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া যেকোনো ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

কলা : কলায় ভিটামিন এবং মিনারেলস থাকে। এটি আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কালো জাম : এটি বর্ষাকালের একটি অন্যতম ফল। এতে ক্যালোরি কম রয়েছে এবং আয়রন, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন জাতীয় পুষ্টি রয়েছে। বর্ষার সময় কালো জাম খাওয়া ভালো।

চেরী : বর্ষার অন্যতম আরেকটি ফল হল চেরী। এটি বর্ষাকালে প্রচুর পাওয়া যায়। এটি ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা আমাদের ব্রেনকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে।

হোমিও সমাধান : রোগ নয়, রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এ জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডা. হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে বর্ষার মৌসুমের নানাবিধ রোগসহ যেকোনো জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্র্যভিওিক লক্ষণ সমষ্টিনির্ভর ও ধাতুগতভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে সহজে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। চিকিৎসাবিজ্ঞানে চিরন্তন সত্য বলে কিছুই নেই । কেননা একসময় আমরা শুনতাম যহ্মা হলে রক্ষা নেই, বর্তমানে শুনতে পাই যহ্মা ভালো হয়। এসবকিছু বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ফসল।

নানাবিধ রোগ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। সামগ্রিক উপসর্গের ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। এটিই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীর কষ্টের সমস্ত চিহ্ন এবং উপসর্গগুলো দূর করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়।

বিবিসি নিউজের ২০১৬ তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করে আরোগ্য লাভ করে, আবার ইদানীং অনেক নামধারী হোমিও চিকিৎসক বের হয়েছে তারা মৌসুমে নানাবিধ রোগীকে পেটেন্ট টনিক, দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। তাদের ডা. হানেমান শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ বলেন। রোগীদের মনে রাখতে হবে, বর্ষার মৌসুমে নানাবিধ রোগ কোনো সাধারণ রোগ না, তাই সঠিক চিকিৎসা পেতে হলে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিন।

লেখক : কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র

Tag :

শেয়ার করুন

বর্ষায় নানাবিধ রোগ।

আপডেট টাইম : ০৬:১৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২০

৭১: ঋতুর হিসাবে বর্ষা চলে গেছে, কিন্তু বৃষ্টি চলছে। ঘন ঘন তাপমাত্রার ওঠানামা শরীরে প্রভাব ফেলছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই ফ্লু-জাতীয় রোগব্যাধি বেড়ে যায়। প্রায় সব পরিবারেই এই সময় কেউ না কেউ সর্দি, কাশি, জ্বরে ভোগে।

এর মধ্যে রয়েছে করোনার ভয়। এখানেই শেষ নয়, এই মৌসুমে কিন্তু মশাবাহিত রোগের উপদ্রবও বেড়ে যায়। বৃষ্টিতে বন্যা-জলাবদ্ধতা সঙ্গে করে নিয়ে আসছে নানা রোগের জীবাণু।

এসময় শিশুর দিকে বাবা-মায়ের বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানির ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।

বর্ষার রোগগুলো মূলত পানিবাহিত। এ মৌসুমে বড় শহরগুলোতে পানি জমছে, জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় সুয়্যারেজ লাইনের দূষিত বর্জ্য পানির লাইনে চলে আসছে। এতে ডায়রিয়া, কলেরা, রোটা ভাইরাসের জীবাণু পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে।

আবার বন্যার্ত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই দূষিত পানি পান করে মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত
হচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা সহজেই এসব জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।

এছাড়া পানি দূষণের কারণে শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড, জন্ডিস (হেপাটাইটিস এ ও ই), রক্ত আমাশায়— এসব রোগেরও প্রকোপ বাড়ে। দূষিত পানিতে গোসলের কারণে চুলকানি, খোস-পাঁচড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালে শহরগুলোতে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। পানিবাহিত পেটের অসুখের পাশাপাশি এ মৌসুমে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা জন্মায়।

এই বছর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা মহামারি, চিকুনগুনিয়া রোগবাহী এডিস মশা। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে অনেকের মৌসুমি হাঁপানি বাড়ে। বিশেষ করে শিশুদের অনেকে ব্রঙ্কিওলাইটিসের কারণে তীব্র কাশিতে ভোগে।

বর্ষার মৌসুমে সাতটা রোগ বেশি দেখা দেয়—
ইনফ্লুয়েঞ্জা : অপুর ইনফ্লুয়েঞ্জা দিয়েই কথা বলা শুরু তাই ওই অসুখটার কথাই প্রথমে বলা যাক। বর্ষায় শিশুদের ক্ষেত্রে এটা খুব সাধারণ একটা সমস্যা। সাধারণ জীবাণুঘটিত অসুখই বলা যায় একে। কারণ বাতাসে এই অসুখের জীবাণু প্রচুর ছড়িয়ে থাকে। বর্ষাকালে সেগুলো বাড়বাড়ন্ত হয়। শুধু শিশুদের কেন, বড়দেরও নাক বা মুখ দিয়ে এই জীবাণু ঢুকে শরীরে রোগবালাই বাড়িয়ে দিতে পারে।

লক্ষণ : প্রচণ্ড সর্দি, সঙ্গে জ্বর। গলা ভেঙে যায় বহু বাচ্চার ক্ষেত্রেই। শরীরে ব্যথাও হয় এর বাড়াবাড়ি হলে।

সাবধানতা : শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি থাকে, শিশুর শরীর এই ভাইরাসের সঙ্গে ততো ভালো করে মোকাবিলা করতে পারে। ফলে ওকে পুষ্টিকর তো বটেই পাশাপাশি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে দিন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ডায়েট-চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন। অসুখটা হলে চিকিৎসকই বলে দিতে পারবেন, কী-কী ওষুধ খাওয়াতে হবে।

ডেঙ্গু : বর্ষাকালে মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। এখন তো ডেঙ্গির (ডেঙ্গু ) বেশ বাড়াবাড়ি হয়েছে।

কারণ : মশা এই রোগের জীবাণুর বাহক। মশার কামড় থেকে ছোটদের তো বটেই বড়দেরও এই রোগ হতে পারে।

লক্ষণ : প্রচণ্ড জ্বর। তার সঙ্গে গিঁটে-গিঁটে ব্যথা। সারা শরীরের পেশি নাড়ানোর মতো ক্ষমতাও থাকে না। শিশুরা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। মাথায় যন্ত্রণা হয়। কিছু ক্ষেত্রে শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে।

সাবধানতা : জানালা-দরজা বন্ধ করে এয়ার কন্ডিশনার চালিয়া শিশুকে রাখার ব্যবস্থা না-থাকলে মশারির মধ্যে রাখুন। ঘরে মশা তাড়ানোর তেল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু তার সব কটি শিশুদের জন্য ভালো নয়। কোন তেল ব্যবহার করলে শিশুর ক্ষতি হবে না, তা বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নিন। শিশু এই রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। নাহলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে।

ম্যালেরিয়া : এটিও মশাবাহিত রোগ। বর্ষাকালের সবচেয়ে কমন অসুখ। কারণ বর্ষায় এখানে-সেখানে জমে থাকা জলে মশা সহজে বংশবিস্তার করে। মেয়ে অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়।

লক্ষণ : শুরু হয় হালকা জ্বর দিয়ে। তারপর ক্রমশ উত্তাপ বাড়তে থাকে। ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ নির্দিষ্ট সময় অন্তর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এই অসুখের কারণে।

সাবধানতা : ডেঙ্গির মতো এক্ষেত্রেও শিশুকে মশারির মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। বাড়ির চারপাশে পানি জমে থাকতে দেবেন না। শিশু ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত কি না, তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই টের পাওয়া যায়। এ অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের কোর্স করাতেই হবে।

টাইফয়েড : বর্ষার অতি পরিচিত অসুখ। মূলত জলবাহিত রোগ।

কারণ : বর্ষাকালে অপরিচ্ছন্নতা থেকে এই রোগ ছড়ায়। জলে বা অশুদ্ধ খাবারে টাইফয়েডের জীবাণু বেশি জন্মায়। তা শিশুর পেটে গেলেই টাইফয়েড জাঁকিয়ে বসবে।

লক্ষণ : জ্বর, পেটেব্যথা এই রোগের প্রধান লক্ষণ। জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত হলে মাথাব্যথাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

সাবধানতা : টাইফয়েডের জীবাণু তাড়ানো খুব কঠিন। অসুখ সেরে গেলেও গলব্লাডারে এই জীবাণু থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এই রোগ থেকে খুব সাবধান। শিশুকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। পরিষ্কার জল আর খাবারও খাওয়ান। কেউ টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে, তাকে বাকিদের থেকে দূরে রাখতে হবে। অন্য ঘর হলে সবচেয়ে ভালো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে চিকিৎসা করাতে হবে আক্রান্তর।

গ্যাসট্রোএনটেরাইটিস : বর্ষাকালে জীবাণুঘটিত রোগের অন্যতম। সহজ কথায় যাকে বলে পেটের গোলমাল।

কারণ : বর্ষাকালে শিশুরা অপরিচ্ছন্ন হাতে কোনও খাবার খেলে বা হাত মুখে দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে একসঙ্গে নানাবিধ জীবাণুর আক্রমণে এই অসুখ হয়।

লক্ষণ : পেটে ব্যাপক গণ্ডগোলে এর প্রধান লক্ষণ। পাশাপাশি বহু শিশুরই বমি হতে থাকে। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে।

সাবধানতা : শিশুকে সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। দেখুন যেন নোংরা হাতে কোনো খাবার না খায়। ফিল্টার করা পানি খাওয়ান। একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে ওকে মশলাপাতি দেয়া খাবার বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার দেবেন না। চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন ওষুধের তালিকা। এমনকী এই রোগের সূত্র ধরে পরে  কলেরা পর্যন্ত হতে পারে। তাই সে বিষয়েও সাবধান থাকুন।

হেপাটাইটিস-এ : জলবাহিত রোগ। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও হতে পারে (হেপাটাইটিস-এ)।

কারণ : অপরিশুদ্ধ জল থেকে তো বটেই, পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির মল থেকেও এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। মলের ওপর মাছি বা অন্য পতঙ্গ বসার পর সেগুলো যদি কোনো ফল বা খাবারে বসে, তা হলে সেখান থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লক্ষণ : জন্ডিসের মতো চোখ হলুদ হয়ে যায় অনেকের ক্ষেত্রেই। কারণ এই জীবাণু আক্রমণ করে মানুষের লিভারে। খিদে কমে যায়, বমি হতে থাকে এবং ভয়ংকর পেটে গোলমাল হয়।

সাবধানতা : শিশুদের ভ্যাকসিন দেয়াটা দরকারি। পাশাপাশি পরিশুদ্ধ জল এবং খাবার দিতে হবে। দরকার হলে ফুটিয়ে জল খাওয়াতে হবে। বাইরের কাটা ফল বা অন্য খাবার এই মরসুমে নয়। রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

লেপ্টোস্পিরোসিস : একে ওয়েলস সিনড্রমও বলে। বর্ষাকালে অপরিশুদ্ধ জল থেকে এই রোগ ছড়ায়।

কারণ : মূলত অপিরশুদ্ধ পানি থেকেই এই রোগ ছড়ায়। তবে শিশুরা মাঠে খেলার সময় কাদা মাখলে, সেই কাদা যদি কোনও কারণে মুখে যায়, তা হলেও এই অসুখ হতে পারে।

বর্ষায় সু্স্থ থাকতে মেনে চলুন : তীব্র গরমের পর যখন আকাশে কালো মেঘ দেখা দেয় তখন প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানুষ সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। তখন সবার চোখ যেন কালো মেঘের দেশে পাড়ি দেয়। যখন বর্ষার প্রথম ফোঁটাটা ধরিত্রীকে আলিঙ্গন করে তখন সোদা মাটির গন্ধের নেশা যেন শরীর, মন কাউকেই ছাড়তে চায় না। সেই সঙ্গে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ হলে তো পুরো বর্ষাটাই জমে ক্ষীর হয়ে যায়!

আনন্দের মাঝে সমস্যা তো থেকেই যায়। বর্ষাকাল মানেই চারদিকে জল জমে থাকে আর রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত অবস্থায় থাকে। এছাড়াও, বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গে নানারকম রোগের আবির্ভাব হয়। যেমন- বর্ষাকালে আমাদের বেশির ভাগেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়।

ফলে, নানারকম সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হজমের সমস্যা এবং মশার কামড়ঘটিত নানাবিধ রোগতো রয়েছেই। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনও দেখা দেয়। এইসময় বাতাসে এমনিতেই আর্দ্রতা বেশি থাকে।

বর্ষাকালে রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকায় প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেইজন্য রোজকার খাদ্যাভাসে সবচেয়ে বেশি যা থাকা প্রয়োজন তা হলো ভিটামিন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক খাবার ও ফল খাওয়া উচিত। আসুন দেখে নেয়া যাক, সুস্থ থাকতে বর্ষাকালে কোন কোন ফল খাওয়া যেতে পারে।

পেঁপে : এতে ভিটামিন-সি প্রচুর রয়েছে। পেঁপে আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে, ইমিউনিটি বাড়াতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আপেল : বর্ষাকালে প্রতিদিন একটি করে ফল খাওয়া খুবই ভালো। এতে অনেক রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এর মধ্যে আপেল খুবই উপকারী। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খাবারের তালিকায় একটি করে আপেল রাখা উচিত।

বেদানা : বেদানার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে। এছাড়া এটা মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে তোলে এবং হজমে সাহায্য করে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ন্যাসপাতি : এটিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরও ঠাণ্ডা রাখে। এছাড়া, জ্বর, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার থাকে।

পেয়ারা : পেয়ারাতে থাকে ভিটামিন-সি। ভিটামিন-সি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া যেকোনো ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

কলা : কলায় ভিটামিন এবং মিনারেলস থাকে। এটি আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কালো জাম : এটি বর্ষাকালের একটি অন্যতম ফল। এতে ক্যালোরি কম রয়েছে এবং আয়রন, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন জাতীয় পুষ্টি রয়েছে। বর্ষার সময় কালো জাম খাওয়া ভালো।

চেরী : বর্ষার অন্যতম আরেকটি ফল হল চেরী। এটি বর্ষাকালে প্রচুর পাওয়া যায়। এটি ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা আমাদের ব্রেনকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে।

হোমিও সমাধান : রোগ নয়, রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এ জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডা. হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে বর্ষার মৌসুমের নানাবিধ রোগসহ যেকোনো জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্র্যভিওিক লক্ষণ সমষ্টিনির্ভর ও ধাতুগতভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে সহজে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। চিকিৎসাবিজ্ঞানে চিরন্তন সত্য বলে কিছুই নেই । কেননা একসময় আমরা শুনতাম যহ্মা হলে রক্ষা নেই, বর্তমানে শুনতে পাই যহ্মা ভালো হয়। এসবকিছু বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ফসল।

নানাবিধ রোগ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। সামগ্রিক উপসর্গের ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। এটিই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীর কষ্টের সমস্ত চিহ্ন এবং উপসর্গগুলো দূর করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়।

বিবিসি নিউজের ২০১৬ তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করে আরোগ্য লাভ করে, আবার ইদানীং অনেক নামধারী হোমিও চিকিৎসক বের হয়েছে তারা মৌসুমে নানাবিধ রোগীকে পেটেন্ট টনিক, দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। তাদের ডা. হানেমান শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ বলেন। রোগীদের মনে রাখতে হবে, বর্ষার মৌসুমে নানাবিধ রোগ কোনো সাধারণ রোগ না, তাই সঠিক চিকিৎসা পেতে হলে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিন।

লেখক : কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র