ফাইনাল পেছালো
- আপডেট টাইম : ০৫:২৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০
- / 78
৭১: বিসিবি প্রেসেডেন্টস কাপের ফাইনাল আজ হওয়ার কথা থাকলেও তা দুই দিন পেছানো হয়েছে। নাজমুল একাদশ ও মাহমুদউল্লাহ একাদশের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ হবে আগামী রোববার।
গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের কারণে সারাদেশে আগামী ৭২ ঘণ্টা অতিভারী বর্ষণ হওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টির কারণে ফাইনাল যেনো পণ্ড না হয় এজন্য খেলা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। ফাইনালের পরের দিন রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। করোনা সঙ্কট কাটিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছিল ক্রিকেটাররা। বিসিবির উদ্যোগে আয়োজিত তিন দলের এই টুর্নামেন্ট করোনা প্রোটোকলের কারণে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হচ্ছে।
তবে দর্শকরা যাতে খেলা উপভোগ করতে পারে এই জন্য বিসিবি ফেসবুক এবং ইউটিউবে অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে খেলাগুলো সরাসরি সমপ্রচার করে আসছে।
তবে প্রতিযোগিতার শুরুতে বলেছিল, গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো কেবল অনলাইন স্ট্রিমিং হলেও বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনাল সরাসরি দেখা যাবে টিভি চ্যানেলে। ফাইনাল দেখানো হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর দেড়টায়।
তিন দলের এই টুর্নামেন্টে চার ম্যাচের তিনটিতে জিতে ছয় পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে নাজমুল একাদশ। দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। ফাইনালে শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। আর চার ম্যাচের মধ্যে কেবল এক জয়ে দুই পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে তামিম একাদশ। প্রায় আট মাস পর ক্রিকেটে ফিরেছে বাংলাদেশ।
সেই আসরের ফাইনালে কে হাসবেন শেষ হাসি? মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নাকি নাজমুল হোসেন শান্ত? প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনাল শেষে শেরেবাংলায় ট্রফি উঁচিয়ে ধরে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার আনন্দ-উল্লাসে মাতবে কোন দল? শান্ত বাহিনী নাকি রিয়াদের দল? তা জানতে কৌতূহলের কমতি নেই ক্রিকেট অনুরাগীদের।
পাশাপাশি আরও একটি কৌতূহলী প্রশ্ন সবার মনেই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের আসর সেরা পারফরমার হবেন কে? কার হাতে উঠবে প্রেসিডেন্টস কাপের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ট্রফি? কে পাবেন নগদ দুই লাখ টাকার পুরস্কার? আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে, প্রেসিডেন্টস কাপে থাকছে নানা নগদ অর্থ পুরস্কার।
চাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল ছাড়াও আসর সেরা ক্রিকেটার, প্রতি খেলার ম্যান অব দ্য ম্যাচ, ফাইনাল সেরা এবং প্রতিযোগিতার সেরা ব্যাটসম্যান, বোলার ও ফিল্ডারকেও দেয়া হবে নগদ অর্থ পুরস্কার। এখন দেখা যাক ওই আসর সেরা পারফরমার হওয়ার দৌড়ে আছেন কারা? এ মুহূর্তে লড়াইয়ে আছেন চারজন— মুশফিকুর রহীম, আফিফ হোসেন ধ্রুব, পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ডান হাতি পেস বোলার রুবেল হোসেন।
এছাড়া বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজও আছেন তাদের বেশ কাছেই। টুর্নামেন্ট সেরা পারফরমার হওয়ার দৌড়ে সবার আগে আছেন মুশফিক। এরই মধ্যে যার নামের পাশে জমা পড়েছে ২০০+ রান। তিনি ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কেউ ২০০ রান করতে পারেননি। নাজমুল একাদশের প্রধান ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিক একটি ম্যাচ ছাড়া সব খেলায় রান পেয়েছেন। প্রথম খেলায় কথা বলেনি মুশফিকের ব্যাট। আউট হয়েছেন মাত্র এক রানে।
কিন্তু পরের তিন খেলায়ই মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ব্যাট জ্বলে উঠেছে। ফিফটি পেরিয়েছেন টানা তিন ম্যাচের। এখন পর্যন্ত আসরের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ানও মুশফিক। সেটা তামিম বাহিনীর বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে।
শেষ তিন ম্যাচে মুশফিকের স্কোর যথাক্রমে ১০৩, ৫১ ও ৫২। চার খেলায় তার মোট সংগ্রহ ২০৭ রান। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিকের খুব না হলেও মোটামুটি কাছেই আছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ বাঁহাতি মিডলঅর্ডারের মোট রান চার ম্যাচে ১৫৭, তার ইনিংসগুলো যতাক্রমে ৪, ১৫, ৯৮, ৪০।
মুশফিকের মতো চার ম্যাচের তিনটিতে পঞ্চাশের ওপরে রান করতে না পারলেও নাজমুল হোসেন শান্তর দলের বাঁহাতি মিডল অর্ডার আফিফও এক ম্যাচে সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র দুই রান দূরে থেকে দুর্ভাগ্যক্রমে রানআউট হয়েছেন।
উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, আফিফ শতরান করতে পারেননি মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে। তারা দুজন একসঙ্গে ব্যাট করছিলেন। নিজেরা রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন। তাতেই সম্ভাব্য শতক হাতছাড়া হয় আফিফের।
এদিকে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বাধিক উইকেট শিকারি সাইফউদ্দিন। তামিম ইকবাল বাহিনীর এ পেসার এ আসরে বোলিং শুরু করেছেন প্রায় ম্যাচেই। সাফল্যও পেয়েছেন নিয়মিত। প্রেসিডেন্টস কাপের একমাত্র বোলার সাইফউদ্দিন, যিনি এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট শিকারি।
তার সেরা বোলিং ২৬ রানে ৫ উইকেট। ৪ ম্যাচে সাইফউদ্দিনের ঝুলিতে জমা পড়েছে সর্বাধিক ১২ উইকেট। কিন্তু দল ফাইনালের আগে রাউন্ড রবিন লিগ থেকে ছিটকে পড়ায় আর ফাইনালে থাকছেন না সাইফউদ্দিনকে। তাকে টপকে সর্বাধিক উইকেট শিকারি হওয়ার সম্ভাবনা আছে পেসার রুবেল হোসেনের।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনীর এ পেসার এখন পর্যন্ত চার খেলায় দখল করেছেন ১০ উইকেট। তার সেরা বোলিং ফিগার ৪/৩৪। সাইফের মতো এক ম্যাচে প্রতিপক্ষ ইনিংসের অর্ধেকটার পতন ঘটাতে না পারলেও রুবেল ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করেছেন। ভাইটাল ব্রেক থ্রু’ও এনেছেন।
সন্দেহ নেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাহিনীর মূল বোলিং অস্ত্রই রুবেল। ফাইনালেও তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে রিয়াদের দল। সাইফ আর রুবেলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিলেন আরেক পেসার মোস্তাফিজুর রহমান।
এ বাঁহাতি পেসারও প্রেসিডেন্টস কাপে দারুণ বোলিং করেছেন। কাটার মাস্টারের উইকেট সংখ্যা ৮, এ বাঁহাতি পেসারের ম্যাচ সেরা বোলিং ফিগার ৩/১৫। তবে ফাইনালে নেই মোস্তাফিজও। তাই সাইফউদ্দিনের মতো ফাইনাল খেলা হচ্ছে না তারও। কাজেই দলকে চ্যাম্পিয়ন করানোর সুযোগটা তাদের মিলছে না।
সে সুযোগ পুরোপুরি থাকছে নাজমুল শান্ত বাহিনীর মুশফিকুর রহীম, আফিফ হোসেন ধ্রুব আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দলের পেসার রুবেল হোসেনের সামনে। তাই বলে দেয়া যায়, টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে মুশফিক, আফিফ আর রুবেল অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই সুযোগ পাবেন। এখন দেখা যাক, আসর সেরা পারফরমারের ২ লাখ টাকার পুরস্কার কার হাতে ওঠে?